Join Now To Make Money Today

....

ওষুধ কোম্পানিতে হাজারো চাকরির সুযোগ

দেশে ওষুধ কোম্পানিগুলোর প্রসার হচ্ছে দিনে দিনে। বাংলাদেশ থেকেই বিশ্বের ৫০ থেকে ৬০টি দেশে ওষুধ যাচ্ছে। ওষুধ তৈরি,
গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ, গবেষণা, নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে শুরু করে বাজারজাত করাসহ বিপুল কর্মযজ্ঞে অনেক মানুষ কর্মরত আছেন। এই শিল্পে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ফার্মাসিস্টদের মতো বিশেষায়িত পদ যেমন আছে, তেমনি যেকোনো বিষয় থেকে পাস করা ব্যক্তির
জন্যও চাকরি আছে এখানে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠিত একেকটি ফার্মায় বিভিন্ন পর্যায়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার লোক কাজ করছেন। ওষুধ কোম্পানিগুলোতে কোন কোন ধরনের চাকরি আছে—এসব নিয়ে বিস্তারিত বলেছেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের মানবসম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মো. ইউনুছ আলী, জেনারেল ফার্মার মানবসম্পদ বিভাগের উপব্যবস্থাপক দিলীপ কুমার সিকদার ও ইনসেপটা ফার্মার মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক মো. এনায়েত হোসেন।
মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভওষুধ কোম্পানিগুলোর প্রসার হচ্ছে দিনে দিনে। কোম্পানিগুলো নিয়মিত নতুন নতুন ওষুধ বাজারে নিয়ে আসছে। আর আগের ওষুধ তো আছেই। এসব ওষুধের পরিচিতি চিকিৎসকদের কাছে তুলে ধরার দায়িত্ব মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভদের (এমআর)। সারা বছরই এ পদে লোক নেয় ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। ওষুধ সম্পর্কে চিকিৎসকদের অবগত করার কাজে নিয়োজিত থাকেন এই পেশার মানুষ। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কী ওষুধ বানাচ্ছে, কেন ও কীভাবে সেই ওষুধগুলো কাজ করবে, আগের ওষুধের সঙ্গে নতুন ওষুধের পার্থক্য কী প্রভৃতি তথ্য জানানোই তাঁদের কাজ। ওষুধের বাজারটা অনেক বড়, তাই এই পেশায় জনবলের চাহিদাও অনেক বেশি। ওষুধের বাজারের আওতা বেড়ে যাওয়া, কোম্পানিগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়া, শূন্য পদ সৃষ্টি হওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে প্রতিবছর অন্তত ১০ হাজার দক্ষ জনবলের প্রয়োজন হয় এই খাতে। এই পদের চাকরিপ্রার্থীর অবশ্যই স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। স্নাতকোত্তরদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। আগে স্নাতক পর্যন্ত বিজ্ঞান বিষয় থেকে পাস করা বাধ্যতামূলক থাকলেও বর্তমানে যেকোনো বিষয় থেকে স্নাতক পাসদের চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রেও এসএসসি পর্যন্ত বিজ্ঞান থাকা বাধ্যতামূলক হলেও কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান যোগ্য প্রার্থী পেলে সেটাও ছাড় দেয়।
বিপণন বিভাগ
িবশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক ওষুধগুলো দেশে বাজারজাতকরণের মাধ্যমে সরকারি অনুমোদন দিয়ে একটি পণ্যের গবেষণালব্ধ ফলাফলগুলো চিকিৎসকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা এবং মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকেন এই বিভাগের কর্মীরা। আর এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন মেধাবী ফার্মাসিস্ট ও চিকিৎসক, যাঁদের আছে রোগ এবং রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত ওষুধ সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান। বিপণন বিভাগের মধ্যে আছে মেডিকেল অ্যাফেয়ার্স, মার্কেটিং রিসার্স বিভাগ।
মেডিকেল অ্যাফেয়ার্স বিভাগে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা সবাই চিকিৎসাবিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করা চিকিৎসক। এখানে কর্মরতরা মূলত সায়েন্টিফিক বা বৈজ্ঞানিক সেমিনারের আয়োজন করা, ওষুধের বিভিন্ন ধরনের প্রকাশনা, চিকিৎসকদের নানান প্রশ্নের উত্তর দেওয়া এবং ক্লিনিক্যাল মিটিং করা। অন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে কাজ করার জন্য যাতে চিকিৎসকদের ভাষা বা চাহিদা ভালোমতো বুঝতে পারা যায়, তাই এই বিভাগে চিকিৎসকেরাই কর্মরত থাকেন।
.এ ছাড়া ড্রাগ রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স এই বিভাগের মধ্যে। এর কাজ হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন বিভাগে নানা ধরনের অনুমতি নেওয়া। সেই বিষয়গুলো এই বিভাগের কর্মরতরা দেখেন। বিপণন জরিপ হচ্ছে এই বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। এর কাজ হচ্ছে বিভিন্ন চিকিৎসকের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র বা প্রেসক্রিপশন জরিপ করে কোন ধরনের ওষুধ চিকিৎসকেরা দেন, তা নথি আকারে তৈরি করা। এখানে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা মার্কেটিং রিসার্চ রিপ্রেজেনটেটিভ নামে পরিচিত। এ ছাড়া বিপণন বিভাগে মার্কেটিং অ্যাসুরেন্স ও ক্রিয়েটিভ ডিজাইন নামের আলাদা আলাদা শাখাও আছে। এ ছাড়া প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কাজ হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের তৈরি ওষুধের বাজার আরও প্রসারিত করা, নতুন ওষুধ বাজারে নিয়ে আসা এবং মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভের প্রশিক্ষণ দেওয়া। এখানে ফার্মাসি, এমবিবিএস, মাইক্রোবায়োলজি, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে পাস করা গ্র্যাজুয়েটরা কাজ করেন।
মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগএই বিভাগকে কোয়ালিটি কন্ট্রোল বা কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স বিভাগ বলা হয়। এই মাননিয়ন্ত্রণ বিভাগের কাজ হচ্ছে কাঁচামাল থেকে শুরু করে তৈরি হওয়া ওষুধের গুণগত মান ঠিক আছে কি না, তা যাচাই-বাছাই করা। এই বিভাগে মাইক্রোবায়োলজি, ফার্মাসি, বায়োকেমিস্ট্রি বা কেমিস্ট্রি থেকে পাস করা গ্র্যাজুয়েট কাজ করেন।
প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট বিভাগ
এই বিভাগের কাজ হচ্ছে ওষুধের উন্নয়নে নানান কাজ করা। যে ওষুধ বাজারে আনা হবে, তার স্থায়িত্ব বা মান ঠিক আছে কি না, কিংবা আবহাওয়ার সঙ্গে কতটুকু মানানসই হবে—এ বিষয়গুলো নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। ওসব ওষুধের নথিপত্র তৈরি করা। এখানে কর্মরতদের বিজ্ঞানী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এখানে মূলত কাজ করেন ফার্মাসি থেকে পাস করা গ্র্যাজুয়েটরা।
প্রোডাকশন বিভাগ
কোনো ওষুধ তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকাই প্রোডাকশন ফার্মাসিস্টদের কাজ। এখানেও কাজ করেন ফার্মাসি থেকে পাস করা গ্র্যাজুয়েটরা।
ওষুধ কোম্পানিগুলোতে সারা বছর মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভ নিয়োগ দেওয়া হয়। ছবি: প্রথম আলোব্যবসায়ী শাখা
এই শাখাকে ইংরেজিতে কমার্শিয়াল ডিপার্টমেন্ট বলা হয়। এঁদের কাজ অনেকটা ব্যবসায়িক কার্যকলাপে যুক্ত হলেও এখানে ফার্মাসিস্ট, প্রকৌশলী বা ব্যবসায় শিক্ষা থেকে পাস করা গ্র্যাজুয়েটরা নিযুক্ত থাকেন। ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগে এমন নানা পণ্যের কাঁচামালসহ অন্যান্য কেনাকাটা করাই এই বিভাগের কাজ। ফার্মাসিস্টরা ওষুধের কাঁচামাল কী কী লাগে, সেটা ভালো বোঝেন বলে এটি কেনাকাটায় তাঁদের দরকার।
তেমনিভাবে ওষুধ তৈরির বিভিন্ন যন্ত্রের ব্যবহার ভালো বোঝেন প্রকৌশলীরা। এ জন্য এই বিভাগে তাঁদের দরকার। সেই সঙ্গে ব্যবসায়িক বিভিন্ন বিষয় যেহেতু ব্যবসায় শিক্ষা থেকে পাস করা গ্র্যাজুয়েটরা ভালো বোঝেন, তাই এই বিভাগে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়।
প্রকৌশল বিভাগওষুধ তৈরির পুরো বিষয়টিতে নানা ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হয়। এগুলোর একেকটির কাজ একেক ধরনের। আর এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা বা দেখভাল করার জন্য নানা প্রকৌশলীর দরকার হয়। এই বিভাগে শুধুই প্রকৌশল বিভাগ থেকে পাস করেন এমন গ্র্যাজুয়েটরাই নিয়োজিত হন। মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের প্রকৌশলীদেরই এখানে বেশি চাহিদা।
বিক্রয় প্রশাসন
এই বিভাগের কাজ হচ্ছে পুরো বিক্রয়ের ক্ষেত্রে যে পরিমাণ লোকবল আছে, তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করা। ওষুধ বিক্রি হওয়ার পরিমাণ, বিক্রয়ের সঙ্গে যুক্ত জনবলের সফলতা বা দুর্বলতা নির্ণয় করা বা পুরো হিসাব তৈরি রাখা।
অর্থ ও হিসাব শাখা
অন্য সব প্রতিষ্ঠানের মতোই ওষুধ তৈরি প্রতিষ্ঠানেও হিসাব শাখা থাকে। এখানে মূলত সংশ্লিষ্ট বিষয় থেকে বিবিএ বা এমবিএ থেকে পাস করা গ্র্যাজুয়েটদের কাজ। এখানে অনেক জটিল আর্থিক বিষয়গুলো দেখভাল করার জন্য চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট নিয়োগ করা হয়।
মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগ
এই বিভাগের মধ্যে থাকে দুটি আলাদা বিভাগ। একটি হচ্ছে হিউম্যান রিসার্চ প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, অপরটি হচ্ছে রিক্রুটমেন্ট ও ট্রেনিং বিভাগ। এসব বিভাগের কাজ হচ্ছে লোকবল নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, বেতনসহ কর্মী আর কর্মকর্তাদের নানা দাপ্তরিক কাজ দেখাশোনা করা।
আন্তর্জাতিক ব্যবসা উন্নয়ন বিভাগ
দেশের বাইরেও যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের দেশি ওষুধ কোম্পানির ওষুধ। ৫০ থেকে ৬০টি দেশে যাচ্ছে এ দেশে তৈরি ওষুধ। এই বিভাগের কাজ হচ্ছে দেশের বাইরে প্রতিনিধি নিয়োগ, বিভিন্ন দেশের ওষুধ বিক্রির অনুমতি নেওয়া প্রভৃতি। এখানে ফার্মাসি ও ব্যবসায় শাখা ও থেকে পাস করা গ্র্যাজুয়েটরা কাজ করেন।
Tag : job
0 Comment "ওষুধ কোম্পানিতে হাজারো চাকরির সুযোগ"

আপনার মূল্যবান মতামত দিন।

যারা অনলাইন এ কাজ করে প্রেমেন্ট নিতে চান পায়জার মাধ্যমে তারা নিচের বেনার টিতে ক্লিক করুন

Back To Top