পরিচিত এক বড়ভাই সুন্দরবন থেকে ঘুরে এলেন। ৭দিনের দীর্ঘ সফর। রোদে পোড়া চামড়া জানান দিচ্ছে তার সুন্দবন চষে বেড়ানোর কথা। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই বাঘ দেখলেন?
>> আরে না। সুন্দরবনে বাঘ আছে নাকি? আর বাঘ দেখার জন্য কি সুন্দরবন গিয়েছিলাম?
অবাক হই না। কথায় কথায় ভড়কে দেয়া তার পুরোনো অভ্যাস। কিছুক্ষণ চুপ করে অবাক হবার ভঙ্গিতে তার দিকে চেয়ে থাকলে তিনি নিজেই মুখ খুলবেন।
>> আমাদের বনমন্ত্রীর কথা মনে আছে? সুন্দরবনের বাঘের বেড়াতে যাওয়ার কথা?
এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদে। বুঝলাম তিনি বাঘের বেড়াতে যাওয়ার গল্প ফাঁদতে শিবের গীত গাইছেন।
>> বাঘ কেন বেড়াতে যায় জানিস?
বিরক্তি চেপে হাসিমুখে বললাম, কেন?
>> খরগোশের জন্য।
প্রায় আঁতকে উঠে বললাম, মানে?
>> তবে শোন। একটা গল্প বলি। সুন্দরবনের গল্প। সেখানে হরিণ থাকে জানিস তো। সেই হরিণ মাত্র গাঁজার কল্কেতে একটান দিয়েছে, এমন সময় খরগোশ হাজির। ছিঃ হরিণ। এটা কি করছো?
হরিণ কিছু বলে না।
খরগোশ বলে, এরচে চলো বনের ভিতর একটু দৌড়াদৌড়ি করি, স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
হরিণ গাঁজার কল্কে রেখে দিয়ে খরগোশের সাথে দৌড়াতে শুরু করল। তারা দুইজন দৌড়াতে দৌড়াতে এক জায়গায় এসে বানরের সাথে দেখা। বানর শিরায় সুঁই ফুটাচ্ছে।
খরগোশ বলে, ছিঃ বানর। কি করছো এটা?
বানর চুপ করে থাকে।
- তোমার শরীরের জন্য ড্রাগ খারাপ। এরচে বরং চলো বনের ভিতর একটু দৌড়াই। রক্ত চলাচল বাড়ুক।
হরিণ, খরগোশ আর বানর তিনজন দৌড়াচ্ছে। দৌড়াতে দৌড়াতে তারা সুন্দরবনের বাংলাদেশ সীমানা ছেড়ে ভারত অংশের কাছাকাছি চলে এসেছে। এমন সময় হঠাৎ বাঘের সাথে দেখা। বাঘ মাত্র আফিম নেয়ার জোগাড় যন্ত্র তৈরি করছে।
তা দেখে খরগোশ বলে, ছিঃ বাঘ।
বাঘ কিছু বলে না।
-এইসব ছাইপাশ না নিয়ে, বরং একটু দৌড়াই চলো।
বাঘ এ কথা শুনেই খরগোশকে ধরে মারতে লাগল। হরিণ আর বানর এসে তাকে থামাল। শেষবারের মত খরগোশকে একটা লাথি মেরে সে বলল, তুই আজ বেঁচে গেলি।
হরিণ বলল, ছিঃ বাঘ। খরগোশ তো ভালো কথাই বলছে।
হ্যাঁ!! হারামজাদা যখনই ইয়াবা খায়, তখনই আমাকে ফুসলিয়ে নিয়ে অর্ধেক বন দৌঁড়িয়ে ভারতে নিয়ে যায়।
গল্প শেষ করে তিনি বললেন, বুঝলি? সুন্দরবনে বাঘ কেন থাকে না।
হাসতে হাসতে বলি, এ গাঁজাখুড়ি গল্প কই পেলে?
>> তোদের মন্ত্রীরা যেখানে বাঘের ঘুরতে যাওয়ার তথ্য পায় সেখানে।
>> তিনি তো বোধহয় মজা করে..
বড়ভাই এবার খেঁকিয়ে উঠলেন, হুমম মজায় মজায় তো তারা সুন্দরবনের বারোটা বাজাচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করে লাঠিপেটা খাচ্ছে আর বাকিরা মজা লুটছে।
>> রামপালের কথা বলছেন? সরকার তো বলছেই এতে পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না।
গম্ভীর মুখে আমার চোখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললেন, ন্যাংটো রাজাকে তার পোশাকের কথা বলার কেউ ছিল না। তোদের সরকারকে তো অনেকেই বলছে তবু... ন্যাংটো থাকার অভ্যাস হয়ে গেলে কেউ আর লজ্জা পায় না বুঝলি?
আমাদের গল্প আর জমে না। তবে পাঠকদের জন্য বাঘের লজ্জা পাবার গল্প দিয়ে ইতি টানছি।
তিনজন লোক। একজন আমেরিকার, একজন ইংল্যান্ডের আর একজন বাংলাদেশের। একসাথে ঘুরতে বেরিয়েছে। কে কাকে কীভাবে টেক্কা দেবে তা নিয়ে প্রত্যেকেই ব্যস্ত।
হঠাৎ আমেরিকার লোকটা বলে উঠল, জানো, আমরা কী রকম বীর? কোনো বাঘ যদি আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায় তাহলে তার দিকে শুধু বন্দুকটা তাক করলেই কেল্লাফতে! গুলির কোনো দরকার নাই!
এই কথা শুনে ব্রিটিশ লোকটা বলল, এ আর এমন কি? আমাদের এমন সাহস যে বন্দুক বেরই করতে হয় না। ঝোলার ভেতর থেকে বন্দুকের নলটা যদি কোনোভাবে বাঘ ব্রাদারের নজরে পড়েছে বা কোনোমতে টের পেয়েছে তাইলে সেখানেই তার হার্ট অ্যাটাক!
এই দুইজনের কথা শুনে বাংলাদেশের লোকটা ভাবছে, আমার তো প্রেস্টিজের ব্যাপার। তাই সে চট করে বলল- আরে ধুর মিয়ারা! তোমরা কোন জমানায় আছ? আমাদের তো বন্দুক-ফন্দুক কিচ্ছু লাগে না! ওই সব আমাদের সাহসের কাছে ফালতু জিনিস, ফাও প্যাচাল!
কথা শুনে আমেরিকান আর ব্রিটিশ তো জব্বর টাসকি খেয়ে গেল। জিজ্ঞেস করলো- তাহলে তোমরা বাঘরে মারো ক্যামনে?
বাংলাদেশি তখন বলল- আরে মিয়া এইডা কোনো ব্যাপার? কোনো বাঘ আমাদের সামনে এলে তার সামনে গিয়ে আমরা শুধু বলি- এ রাআআআমম! তুমি ন্যাংটা-পুটো? বাঘটা তখন লজ্জাতেই মারা যায়!
Author:Bdtricktunes
>> আরে না। সুন্দরবনে বাঘ আছে নাকি? আর বাঘ দেখার জন্য কি সুন্দরবন গিয়েছিলাম?
অবাক হই না। কথায় কথায় ভড়কে দেয়া তার পুরোনো অভ্যাস। কিছুক্ষণ চুপ করে অবাক হবার ভঙ্গিতে তার দিকে চেয়ে থাকলে তিনি নিজেই মুখ খুলবেন।
>> আমাদের বনমন্ত্রীর কথা মনে আছে? সুন্দরবনের বাঘের বেড়াতে যাওয়ার কথা?
এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদে। বুঝলাম তিনি বাঘের বেড়াতে যাওয়ার গল্প ফাঁদতে শিবের গীত গাইছেন।
>> বাঘ কেন বেড়াতে যায় জানিস?
বিরক্তি চেপে হাসিমুখে বললাম, কেন?
>> খরগোশের জন্য।
প্রায় আঁতকে উঠে বললাম, মানে?
>> তবে শোন। একটা গল্প বলি। সুন্দরবনের গল্প। সেখানে হরিণ থাকে জানিস তো। সেই হরিণ মাত্র গাঁজার কল্কেতে একটান দিয়েছে, এমন সময় খরগোশ হাজির। ছিঃ হরিণ। এটা কি করছো?
হরিণ কিছু বলে না।
খরগোশ বলে, এরচে চলো বনের ভিতর একটু দৌড়াদৌড়ি করি, স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
হরিণ গাঁজার কল্কে রেখে দিয়ে খরগোশের সাথে দৌড়াতে শুরু করল। তারা দুইজন দৌড়াতে দৌড়াতে এক জায়গায় এসে বানরের সাথে দেখা। বানর শিরায় সুঁই ফুটাচ্ছে।
খরগোশ বলে, ছিঃ বানর। কি করছো এটা?
বানর চুপ করে থাকে।
- তোমার শরীরের জন্য ড্রাগ খারাপ। এরচে বরং চলো বনের ভিতর একটু দৌড়াই। রক্ত চলাচল বাড়ুক।
হরিণ, খরগোশ আর বানর তিনজন দৌড়াচ্ছে। দৌড়াতে দৌড়াতে তারা সুন্দরবনের বাংলাদেশ সীমানা ছেড়ে ভারত অংশের কাছাকাছি চলে এসেছে। এমন সময় হঠাৎ বাঘের সাথে দেখা। বাঘ মাত্র আফিম নেয়ার জোগাড় যন্ত্র তৈরি করছে।
তা দেখে খরগোশ বলে, ছিঃ বাঘ।
বাঘ কিছু বলে না।
-এইসব ছাইপাশ না নিয়ে, বরং একটু দৌড়াই চলো।
বাঘ এ কথা শুনেই খরগোশকে ধরে মারতে লাগল। হরিণ আর বানর এসে তাকে থামাল। শেষবারের মত খরগোশকে একটা লাথি মেরে সে বলল, তুই আজ বেঁচে গেলি।
হরিণ বলল, ছিঃ বাঘ। খরগোশ তো ভালো কথাই বলছে।
হ্যাঁ!! হারামজাদা যখনই ইয়াবা খায়, তখনই আমাকে ফুসলিয়ে নিয়ে অর্ধেক বন দৌঁড়িয়ে ভারতে নিয়ে যায়।
গল্প শেষ করে তিনি বললেন, বুঝলি? সুন্দরবনে বাঘ কেন থাকে না।
হাসতে হাসতে বলি, এ গাঁজাখুড়ি গল্প কই পেলে?
>> তোদের মন্ত্রীরা যেখানে বাঘের ঘুরতে যাওয়ার তথ্য পায় সেখানে।
>> তিনি তো বোধহয় মজা করে..
বড়ভাই এবার খেঁকিয়ে উঠলেন, হুমম মজায় মজায় তো তারা সুন্দরবনের বারোটা বাজাচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করে লাঠিপেটা খাচ্ছে আর বাকিরা মজা লুটছে।
>> রামপালের কথা বলছেন? সরকার তো বলছেই এতে পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না।
গম্ভীর মুখে আমার চোখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললেন, ন্যাংটো রাজাকে তার পোশাকের কথা বলার কেউ ছিল না। তোদের সরকারকে তো অনেকেই বলছে তবু... ন্যাংটো থাকার অভ্যাস হয়ে গেলে কেউ আর লজ্জা পায় না বুঝলি?
আমাদের গল্প আর জমে না। তবে পাঠকদের জন্য বাঘের লজ্জা পাবার গল্প দিয়ে ইতি টানছি।
তিনজন লোক। একজন আমেরিকার, একজন ইংল্যান্ডের আর একজন বাংলাদেশের। একসাথে ঘুরতে বেরিয়েছে। কে কাকে কীভাবে টেক্কা দেবে তা নিয়ে প্রত্যেকেই ব্যস্ত।
হঠাৎ আমেরিকার লোকটা বলে উঠল, জানো, আমরা কী রকম বীর? কোনো বাঘ যদি আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায় তাহলে তার দিকে শুধু বন্দুকটা তাক করলেই কেল্লাফতে! গুলির কোনো দরকার নাই!
এই কথা শুনে ব্রিটিশ লোকটা বলল, এ আর এমন কি? আমাদের এমন সাহস যে বন্দুক বেরই করতে হয় না। ঝোলার ভেতর থেকে বন্দুকের নলটা যদি কোনোভাবে বাঘ ব্রাদারের নজরে পড়েছে বা কোনোমতে টের পেয়েছে তাইলে সেখানেই তার হার্ট অ্যাটাক!
এই দুইজনের কথা শুনে বাংলাদেশের লোকটা ভাবছে, আমার তো প্রেস্টিজের ব্যাপার। তাই সে চট করে বলল- আরে ধুর মিয়ারা! তোমরা কোন জমানায় আছ? আমাদের তো বন্দুক-ফন্দুক কিচ্ছু লাগে না! ওই সব আমাদের সাহসের কাছে ফালতু জিনিস, ফাও প্যাচাল!
কথা শুনে আমেরিকান আর ব্রিটিশ তো জব্বর টাসকি খেয়ে গেল। জিজ্ঞেস করলো- তাহলে তোমরা বাঘরে মারো ক্যামনে?
বাংলাদেশি তখন বলল- আরে মিয়া এইডা কোনো ব্যাপার? কোনো বাঘ আমাদের সামনে এলে তার সামনে গিয়ে আমরা শুধু বলি- এ রাআআআমম! তুমি ন্যাংটা-পুটো? বাঘটা তখন লজ্জাতেই মারা যায়!
Author:Bdtricktunes
Tag :
article
0 Comment "সুন্দরবনের কেচ্ছা আর বাঘের লজ্জা!"
আপনার মূল্যবান মতামত দিন।